মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহের শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে লালমনিরহাটবাসী। সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা বিভাগ।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, লালমনিরহাটের তাপমাত্রা ১০ডিগ্রীর নিচে চলে গেছে। এজন্য জেলার সকল মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আজ সোমবার ও কাল মঙ্গলবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিক না হলে এ ছুটি বাড়তে পারে বলেও তিনি জানান।
লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার রায় চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, চলমান শৈত্য প্রবাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, শৈত্য প্রবাহ চলমান থাকায় লালমনিরহাট জেলার ২২/০১/২০২৪খ্রি. তারিখ সকাল ০৮.০০ ঘটিকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়ায় লালমনিরহাট জেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের একাডেমিক কার্যক্রম সূত্রোক্ত স্মারক মোতাবেক বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এমতাবস্থায়, তাপমাত্রা ১০ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তদুর্ধ্ব হলে লালমনিরহাট জেলার সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
এদিকে গত ২দিনের হাড় কাঁপানো শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন। কুয়াশার সাথে অব্যাহত হিমেল হাওয়ায় শীত বেড়েছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে। গত রাতভর পড়েছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। দেখা মিলছে না সূর্যের। আবহাওয়া অফিস জানালো আরও দীর্ঘ হতে পারে শৈত প্রবাহ।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, সোমবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীতে কৃষি নির্ভর তিস্তা ও ধরলা চরাঞ্চলের মানুষ পড়েছে বিপাকে। প্রচন্ড শীতেও শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন বের হচ্ছেন জীবীকার সন্ধানে। এখন পর্যন্ত নদী চরের অনেক এলাকায় সরকারি সহায়তা পাননি বলে অনেকের অভিযোগ। এদিকে হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় আরও বেশি শীত অনুভব হচ্ছে।
এদিকে প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পাচ্ছে দরিদ্র মানুষজন। খড় খুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষজন। প্রচন্ড শীতে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুরা ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় শীতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, শীতের কারণে কয়েকদিন ধরে হাসপাতালগুলোতে সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা সেবা দিচ্ছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ চলছে। বরাদ্দকৃত দুই দফায় পাওয়া মোট ২৮হাজার পিচ কম্বল বিতরণ শেষের দিকে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে।